আমাদের দৈনন্দিন খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে রসুন। রসুনে রয়েছে অনেক পুষ্টি গুন যেমন, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নায়াসিন,প্যান্টোথেনিক এসিড, ফুলেট ও সেলেনিয়াম। এছাড়াও রসুনের মধ্যে রয়েছে এলিসিন নামক এক উপাদান। যা আমাদের ক্যান্সার ও অনেক জটিল শারীরিক সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। রসুনের মাঝে থাকা এলিসিন উপাদান এর কারনে রসুন কে সুপারফুড বলা হয়।
প্রাচিন কাল থেকেই রসুন এর গুনাগুন সম্পর্কে মানুষ জানতো। তখন রসুন কে শুধু বিভিন্ন রোগ সারানোর কাজে ব্যাবহার করা হতো। অনেক আগে থেকেই খালি পেটে সকালে রসুন খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে মানুষ জানতো। রসুন এমন এক উপাদান যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল ক্ষত্রে ব্যবহার করা হয়। সারা দুনিয়াতে বাণিজ্যিক ভেষজ হিসাবে রসুন সফল। হৃদরোগ প্রতিরোধে রসুন খুব গুরুত্তপুর্ন ভূমিকা পালন করে। কাঁচা রসুন খাওয়ার ফলে হার্ট ভালো থাকে।
রসুনের কিছু উপকারিতা
রান্নার ক্ষেত্রে
রসুন মসলা হিসাবে কাজ করে রান্নার ক্ষেত্রে। রসুন ছাড়া কোন রান্নার স্বাদ বাড়ে না। রসুন ছাড়া রান্না একদম স্বাদ হীন। রসুন একদিকে যেমন খাবারের স্বাদ বাড়ায় তেমনি রসুন খাবারের পুষ্টি গুন ও বাড়ায়। যারা কাচা রসুন খেতে না পারে। তারা রান্নায় বেশি পরিমানে রসুন ব্যবহার করে তাদের শরীরের পুষ্টি গুন দরে রাখতে পারেন।
রূপচর্চায় রসুন
আমাদের রূপচর্চার জন্য রসুন অনেক ভাবে ব্যবহার করা হয়। রসুনের মধ্যে অনেক পুষ্টি গুন থাকে যা শরীরের অনেক সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। যেমন চেহারার উজ্জ্বলতা বাড়ায়। বয়সের ছোপ ও বিভিন্ন দাগ দূর করতে সাহায্য করে রসুন।
রসুনের ঔষধি গুনাগুন
ঔষধ হিসাবেও রসুন আমাদের দেহে অনেক ভূমিকা পালন করে। রসুনে রয়েছে অনেক পুষ্টি কর উপাদান যা আমাদের শরীরের অনেক রোগ প্রতিরোধ সাহায্য করে। রসুনে সকল প্রকার গুন রয়েছে। রসুন সবচেয়ে বেশি কাজ করে ঠান্ডা, সর্দি ও কাশির ক্ষেত্রে। এছাড়াও আরো অনেক রোগ প্রতিরোধে রসুন কাজ করে।
রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
যেভাবে রসুন রোগ প্রতিরোধে কাজ করে তা হলো, রসুনে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল গুন যা রসুনকে ঔষধের মতোই তৈরি করেছে। সকালে খালি পেটে রসুন খেলে সব চেয়ে বেশি উপকার হয়। এখন প্রায় অনেক মানুষেই এই পদ্ধতিতে রসুন খায়। যার ফলে অনেকে উপকার হয়েছে। আর এই পদ্ধতিতে প্রতিদিন রসুন খাওয়া যেতে পারে।
রসুন উচ্চরক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
রসুন সবচেয়ে বেশি কাজ করে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে। প্রতিদিন সকালে খালিপেটে দুই কোয়া রসুন খেলে উচ্চ রক্তচাপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
সংক্রমন প্রতিরোদে সাহায্য করে
প্রতিটি মানুষই কোন না কোন সংক্রমনে আক্রান্ত হতে পারে। সংক্রমনের আগে কোন পূর্ব লক্ষন পাওয়া যায়না। যার ফলে যে কোন সময় যে কেও আক্রান্ত হতে পারে। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়মিত রসুন খাওয়া অনেক উপকারী।
রূপচর্চায় রসুন
রূপচর্চার ক্ষেত্রে রসুন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন এক কোয়া রসুন খেলে ত্বক অনেক ভালো থাকে। ত্বকের সকল সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
ত্বকের বার্ধক্যের ছাপ দূর করে রসুন। ত্বকে কোন কালো দাগ থাকলে কমে যায়।
মুখে ব্রন হলে ব্রনের মাঝে রসুনের কোয়া গষে দিলে ব্রন দ্রুত মিলিয়ে যায়।
দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটা মানুষ রসুনের সাথে পরিচিত। প্রতিদিন সবাই কোন না কেন ভাবে রসুন খেয়ে থাকে। যার ফলে অনেক উপকারী হওয়া যায়। রসুন রান্নার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে খাওয়া হয় বেশি। তবে কাচা রসুন খাওয়া সবচেয়ে ভালো। বর্তমানে রসুনের গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পেরে অনেকে রসুন খাওয়ার অভ্যাস করছে৷ রসুন খাওয়ার ফলে অনেক রোগের থেকে মুক্তি মিলছে।
আমাদের শেষ কথা
আমাদের সকলের রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। রান্নার পাশাপাশি কাচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কারন কাচা রসুনে সবচেয়ে বেশি রোগ প্রতিরোদ ক্ষমতা। আর তাই বলা যায় যে সুস্থ থাকার জন্য প্রতিটি মানুষের নিয়মিত রসুন খেতে হবে। যারা রসুন খেতে না পরে তাদের রসুনের সকল গুনাগুন সম্পর্কে জানিয়ে তাদেরকেও রসুন খেতে আগ্রহি করতে হবে।
আ/গ