২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গত শনিবার ময়মনসিংহ সদর উপজেলরা ৭নং চরনিলক্ষিয়া ইউনিয়নের রশিদপুর গ্রামে দিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গ্রামবাসীর আয়োজনে এ মহান স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন উপলক্ষ্যে এই সংবর্ধণা অনুষ্ঠান করা হয়।
সকালে বিনা পয়সায় ব্লাড গ্রুপিং এর মাধ্যমে দিনটির শুভ সূচনা করা হয়।পরে বড় ও ছোটদের মাঝে ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুরে মধ্যান্হ ভোজের পর মুক্তিযোদ্ধা ও আমন্ত্রীত অতিথিদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজুর রহমান ফকির ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান ফকির। এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।
পরে বিকেলে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ও বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলাটি পরিচালনা করেন লুৎফর রহমান(ইকবাল) ফকির ও কাজী আবুল কালাম আজাদ। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, আমন্ত্রীত অতিথি বৃন্দ ও শত শত ক্রিড়ামোদী দর্শকরা খেলাটি উপভোগ করেন।
পরে ৭১ এ মহান মুক্তিযোদ্ধে দেশ-মাতৃকার লড়াইয়ে বিশেষ অবদান রাখা এই বীর সেনানীদেরকে উত্তরীয় ও ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধীত করা হয়। এসময় সংবর্ধণা দেওয়া হয় ময়মনসিংহের ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। তারা হলেন-
সংবর্ধনা শেষে এক বক্তব্যে ফয়েজর রহমান ফকির বলেন- আমরা যে ভোটের অধিকারের জন্য দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী লড়াই করেছিলাম সে অধিকার এখনো আদায় হয় নি,মানুষ ভোট দিতে পারছে না, পাকিস্তানীরা যে ভাবে বাঙালীকে শোষণ করতো এখনো রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে এক শ্রেণীর লোক মানুষকে শোষণ করছে, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোটপাট করে বিদেশে পাচর করছে,এর প্রভাব পরছে দেশের অর্থনীতে, সাধারণ মানুষ এখন খুব কষ্টে দিন যাপন করছেন।
ডা. মাহফুজুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন- বাংলা ভাষার জন্য আমরা যে লড়াই করেছি, আমাদের সে লড়াইয়ের উদ্দেশ্য অর্জন হয় নি, মানুষ নিজের নাম ফাটানোর জন্য বাংলার পরিবর্তে ইংরেজীতে সাইনবোর্ড লেখেন। আমাদের উচিৎ সেসব সাইনবোর্ড ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া। এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন আমাদের বসে থাকলে চলবে না, আসুন আমরা সর্ব স্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনকে চালু করার লড়াইয়ে অংশ নেই।
ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতালের প্যাথলোজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিশু বিষেশজ্ঞ ও অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মঞ্জরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী-লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাজী আজাদ জাহান শামীম, শম্ভূগঞ্জ জি.কে.পি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ড. সিরাজুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী-লীগের আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন তোতা প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস যাতে নতুন প্রজন্ম জানতে পারে সে জন্য মুক্তিযুদ্দের ইতিহাস নিয়ে লেখা বই তোলে দেওয়া হয় শিশু কিশোরদের মাঝে। শিশু-কিশোরদের হাতে বই তোলে দেন বইয়ের লেখক ডা. মহফুজুর রহমান ফকির।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন মেজদাকুর রহমান তমাল ফকির। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আরিফ হোসেন ফকির। সবশেষ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান মালার।
আ/গ