বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরাম সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১৯ মার্চ ২০২২ বাসদ(মার্কসবাদী)-র বিশেষ সাংগঠনিক সম্মেলনে মাসুদ রানা সমন্বয়ক নির্বাচিত বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় বিশেষ সাংগঠনিক সম্মেলন ১৭,১৮ ও ১৯ মার্চ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরাম ২২/১ তোপখানা রোড (৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১০০০ এর বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কমরেড মানস নন্দীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাসুদ রানার পরিচালনায় সম্মেলনে পার্টির সদস্য ও আবেদনকারী সদস্যগণ তিনদিন ব্যাপী এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কমরেড মাসুদ রানাকে সমন্বয়ক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরাম গঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কমরেড সীমা দত্ত, শফিউদ্দিন কবির আবিদ, মাসুদ রেজা, নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, ডা, জয়দীপ ভট্টাচার্য, তাসলিমা আক্তার বিউটি, আসমা আক্তার, আহসানুল আরেফিন তিতু, ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য সোমা, রাশেদ শাহরিয়ার, রাজু আহমেদ ও বিটুল তালুকদার।
সম্মেলনে বক্তাগণ বলেন, দেশের জনগণ আজ এক ভয়াবহ সংকটকাল অতিক্রম করছে। চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরিবর্তে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমাগত গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করছে।
সেবাখাতসমূহ থেকে ভর্তুকি উঠিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। জনকল্যাণমূলক খাতে বরাদ্দ হ্রাস করলেও বড় বড় অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করছে। উন্নয়নের নামে চলছে লুটপাট। একদিকে দেশের শ্রমিক-কৃষকসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে অন্যদিকে দেশে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা। ধনী-গরীবের বৈষম্য ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এই বৈষম্য ও দেশের জনগণের দুর্দশার মূল কারণ পুঁজিবাদী আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা।
বক্তাগণ আরও বলেন, মুষ্ঠিমেয় পুঁজিপতি শ্রেণীর স্বার্থেই শাসকদল আওয়ামী লীগ সমস্ত নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। ধনিক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষা করতে উন্নয়নের নামে ক্রমাগত গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। দেশের মানুষের ভোটাধিকার পর্যন্ত কেড়ে নিয়ে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন হয়ে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে। ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রাখতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ একের পর এক কালা-কানুন প্রণয়ন করছে। বুর্জোয়া শাসনের ফলশ্রুতিতে দেশের শ্রমিক-কৃষকসহ জনসাধারণ পিষ্ঠ হলেও দেশে বিদ্যমান বামশক্তির আদর্শগত বিভ্রাপ্তি ও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে শক্তিশালী কোন গণআন্দোলন অনুপস্থিত। এমতাবস্থায় দেশের জনসাধারণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় ও জনজীবনের সংকট নিরসনে গণআন্দোলন গড়ে তোলা ও দেশে বিদ্যমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ করে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে শ্রমিকশ্রেণীর যথার্থ বিপ্লবী দল গড়ে প্রত্যয় ঘোষিত হয় সম্মেলনে। দেশের জনসাধারণকে সেই আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।